বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে হলের ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক চূড়ান্ত পর্বের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত কুমার (২৫)।

সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ( আইসিইউতে) বিকেল সোয়া ৫ টায় মারা যান তিনি।

অমিতের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিক্যাল কলেজের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের মেডিকেল অফিসার ও নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রের কর্তব্যরত ডা. ইফরান হক।

তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। তবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আইসিউতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা তার অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে বের করে আনি।’

আঘাতের ধরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এ জন্য যে ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার তা করার সময় পাওয়া যায় নি। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা সমীচিন হবে না।

অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। তিনি শহীদ রফিক জব্বার হলের ৩১৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।

তারা গ্রামের বাড়ি খুলনায়। বাবা নিতায় কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে কর্মরত আছেন।
অমিত পরিবারের একমাত্র সন্তান।

শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানা যায়, আজ দুপুরের দিকে বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে হলের ৫ তলার ছাদে যান অমিত কুমার। সেখানে রেলিয়েং উঠেন তিনি। পরে তার দেহ নিচে পড়ে থাকতে দেখেন ৪৭তম ব্যাচের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কবির। কবির সহ হলের বেশ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী মিলে অমিতকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার সেন্টারে নিয়ে যায়।সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ততক্ষনাৎ সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ধারণা করা হচ্ছে রেলিংয়ে পেছন দিক হয়ে বসতে গিয়ে পড়ে গেছেন অমিত কুমার।

অমিতের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্ববদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নূহু আলম বলেন, অমিত আমার খুব কাছের একজন শিক্ষার্থী ছিলো। আগামী ২৩ তারিখে আমার কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা তাঁর। এমন সময়ে তাঁর মৃত্যু আমার জন্য কতটা শোকের তা বলে বোঝানো যাবে না। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলাম। তাঁর পরিবার এই শোক কাটিয়ে উঠুক সেই কামনা করি। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আমি অমিতের সঙ্গে হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ছিলাম। তাঁর সর্বোচ্চ চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও তাকে বাঁচানো গেলো না। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, অমিত কুমারের মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।